কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী থানার সন্তোষপুর ইউনিয়নের আলেবের ১৩পতি নামক বাজারে বাংলাদেশ জামাতে ইসলামের একজন এমপি ক্যান্ডিডেটের ব্যানার লাগানো ছিল। সেই ব্যানারটি স্থানীয় এক যুবক — শামসুল হুদা সুমন — নামিয়ে ফেলে এবং নিজের পার্সোনাল ব্যক্তিগত ব্যানার সেখানে লাগায় এবং ব্যানারটি ছিঁড়ে সে বাড়িতে নিয়ে যায়।
এই ঘটনাটি স্থানীয় লোকজন প্রত্যক্ষ করে এবং ভিডিও করে ফেসবুকে পোস্ট করে। আমি নিজেও সেই ঘটনাটি ফেসবুকে শেয়ার করে নিন্দা জানাই। এর জের ধরে সুমন আরও কয়েকজনকে নিয়ে হাতে ট্রেন ও বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্রসহ আমাদের পাতারি মসজিদ বাজারে আসে। তখন আমি বাজারে অবস্থান করছিলাম।
সুমন পাঁচালী মসজিদে এসে গালাগালি শুরু করলে আমি দোকান থেকে বের হয়ে জানতে চাই, “কি হয়েছে?” তখন সুমন আমাকে কয়েকটা থাপ্পর দেয় এবং আমার শার্টের কলার ধরে সবার সামনে বলে, "তুই এই মুহূর্তে এক লাখ টাকা দিবি এবং পোস্ট ডিলেট করবি, না হলে তোকে দিয়ে ধরাবো" — বলে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখাতে থাকে।
আমি চিৎকার করলে বাজারের লোকজন চলে আসে। তাদের সামনেই সুমন পকেট থেকে একটা ধারালো চাকু বের করে আমার দুই বন্ধুকে গুরুতর আঘাত করে। স্থানীয় লোকজন তার পকেট থেকে টাকা ও চাকু উদ্ধার করে।
সুমন বাজারে আসার আগেই আমি নাগেশ্বরী থানার অফিসার ইনচার্জকে ফোনে জানাই। তিনি মোবাইল কলে কোড পাঠান। এর মধ্যে সুমন পাঁচালী মসজিদে এসে আমাদের ওপর আক্রমণ করে। উপস্থিত লোকজন তাকে গণধোলাই দিয়ে রশি দিয়ে বেঁধে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
পরে প্রশাসন এসে সবাইকে হাসপাতালে যেতে বলে। আমরা হাসপাতালে গেলে, সেখানে সুমনের বাবা ও স্থানীয় ডাক্তারের সামনেই আমাদের ভয়ভীতি দেখাতে থাকে, এমনকি মেরে ফেলার মতো অবস্থাও তৈরি করে।
তখন আমরা ভয়ে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে নাগেশ্বরী থানায় গিয়ে একটি মামলা দায়ের করি। মামলায় পাঁচজনকে নামধারী আসামি ও তিন-চারজনকে অজ্ঞাতনামা করা হয়।
এরপর নাগেশ্বরী থানার পুলিশ গতকাল বিকেল আনুমানিক ৪টা থেকে সাড়ে ৪টার মধ্যে দ্বিতীয় আসামী শাহানুর আলম (ছকিনুর) গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়। বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান চলমান রয়েছে এবং অতি শীঘ্রই তাদেরও গ্রেফতার করা হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
0 Comments