দীর্ঘদিন মাঠে সংগঠিত আন্দোলনের অভাবে ছন্দ হারানো বিএনপি এখন যেন নতুন করে ছন্দ খুঁজে পেয়েছে। কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলায় দলের তৃণমূল পর্যায়ে 'রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা' ঘিরে দেখা যাচ্ছে এক ধরনের রাজনৈতিক জাগরণ।
গত (সোমবার) ১৭ জুন ভিতরবন্দে ও ২০ জুন (শুক্রবার) নুনখাওয়া ইউনিয়নে লিফলেট বিতরণ, বাজারে প্রচারাভিযান ও নেতাকর্মীদের সমন্বিত অংশগ্রহণ সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে—বিএনপি আবার মাঠে ফিরছে, এবার সুপরিকল্পিত রূপরেখা নিয়ে।
এই কর্মসূচির নেতৃত্ব দেন, আজিজুল হক, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। তাঁর তত্ত্বাবধানে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনসমূহ সম্মিলিতভাবে এই প্রচারে অংশ নেয়।
আজিজুল হক বলেন,
“৩১ দফা শুধু রাজনৈতিক দাবি নয়, এটি একটি আন্দোলনের দিকনির্দেশনা। এটি হচ্ছে ভবিষ্যতের গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের খসড়া রূপরেখা।”দল ঘোষিত এই ৩১ দফার মধ্যে রয়েছে:
তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহাল
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা
প্রশাসনিক জবাবদিহিতা
মৌলিক মানবাধিকারের পূর্ণ প্রতিষ্ঠা
এমন বিষয়গুলো গ্রামীণ রাজনীতিতে সচরাচর আলোচনায় উঠে আসে না। কিন্তু বিএনপি এবার সেগুলো নিয়ে যাচ্ছে জনগণের কাছে—হাটে, ঘাটে, বাজারে।
নুনখাওয়া ইউনিয়নের এই প্রচারে অংশ নেন: তাজুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি, ইউনিয়ন বিএনপি
আবুল হাসনাত, সাবেক সাধারণ সম্পাদক,মফিজুল ইসলাম লিমন, সভাপতি, ছাত্রদল
ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের শতাধিক নেতাকর্মী।
স্থানীয় নেতারা বলছেন, প্রচারণা কেবল লিফলেট বিলির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এটি রাজনৈতিক বার্তা প্রত্যন্ত মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছানোর চেষ্টা।
এখন প্রশ্ন উঠছে—এটা কি নিছক একটি প্রচার-প্রচেষ্টা, না কি বিএনপি সত্যিই তৃণমূলে পুনর্গঠনের পথে হাঁটছে?
নেতাকর্মীদের মাঝে যে উচ্ছ্বাস ও আন্তরিকতা দেখা যাচ্ছে, তা দীর্ঘ সময়ের নিষ্ক্রিয়তার পর একটি সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেয়। তবে এটি কতটা টেকসই হবে, তা নির্ভর করবে এর ধারাবাহিকতা ও সাংগঠনিক বিস্তারের ওপর। নাগেশ্বরীর মাঠের এই কর্মসূচি হয়তো বড় কোনো রাজনৈতিক অভিযাত্রার সূচনা মাত্র—যেখানে বিএনপির জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে ঘোষণাগুলো বাস্তবে রূপ দেওয়ার।
প্রতিবেদকঃ মিজানুর রহমান
0 Comments