এনামুল হক সরকার, বিশেষ প্রতিনিধি, রাজারহাট
পড়াশোনার পাশাপাশি কৃষকের সন্তান হিসেবে কৃষি অফিস থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে নিজস্ব দুই একর জমিতে সমন্বিত খামারের পঞ্চাশ শতাংশ জমিতে উন্নত জাতের তাই ওয়ান কিং পেঁপে চাষাবাদে বাম্পার ফলনে মুনাফা অর্জনের স্বপ্ন বুনছেন রাকিবুল ইসলাম (২১)।
” তাই ওয়ান কিং” পাঁচ শতাধিক গাছের বাগান হতে দশ থেকে বার হাজার কেজি পেঁপে উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরামর্শ সহযোগিতায় গড়ে উঠা সমন্বিত খামারে রয়েছে হাঁস,পুকুরে মাছ,পুকুর পাড়ে সবজি,সুপারি চারাগাছের পাশাপাশি বাবা ও ছেলের যৌথ শ্রমে জৈব সার উৎপাদন ব্যবস্থা।সমন্বিত খামারের উদ্যোক্তা রাকিবুল ইসলাম উপজেলার রাজারহাট সদর ইউনিয়নে দুধখাওয়া গ্রামের নজরুল ইসলামের পুত্র ও সরকারি মীর ইসমাইল হোসেন কলেজের ডিগ্রী দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। রাকিবুল ইসলাম বলেন,কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের এসএসিপি-রেইনস প্রজেক্টের সহযোগীতায় দুই একর জমিতে সমন্বিত খামার তৈরি চেষ্টা করতেছি।
তার মধ্যে পঞ্চাশ শতাংশ জমিতে পাঁচ শতাধিক তাই ওয়ান কিং পেঁপের চারাগাছ ৫ মাস আগে রোপণ করি।উপজেলা কৃষি অফিসের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় কৃষি উপ-সহকারী সোহানা আপার নিয়মিত খোঁজ খবরে প্রায় ৫মাসে নিবিড় পরিচর্যায় গড়ে ওঠা বাগান থেকে পেঁপে কর্তন শুরু করছি।আশা করতেছি প্রতিটি গাছে কমপক্ষে ২০ থেকে ৩০ কেজি গাছ হতে পেঁপে কাটতে পাব।সঙ্গে পুকুর পাড়ে মালচিং পদ্ধতিতে বিভিন্ন জাতের সবজি রোপণ করছি,সাড়ে চার হাজার থেকে পাঁচ হাজার সুপারি চারাগাছ আছে,পাশেই ঘরে দেড় শতাধিক দেশিও হাঁস আছে।এছাড়াও পচাত্তর শতাংশ পুকুরে কয়েক জাতের কুড়ি মন মাছ চাষ করতেছি।
এতে আমাদের সব মিলিয়ে তিন লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে।আমার বাগানের পেঁপে, মাছ,হাসঁ, সুপারির চারাগাছ বাজারজাত করলে কমপক্ষে ৬-৯ লক্ষ টাকা হবে।রাজারহাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোছা: সাইফুন্নাহার সাথী বলেন,স্মলহোল্ডার এগ্রিকালচার কম্পিটিভনেস প্রজেক্ট সহযোগিতায় ৩০জন কৃষকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।যুব মডেল বাস্তবায়নের জন্য রাকিবুল ইসলামকে সমন্বিত খামার করতে উদ্বুদ্ধ ও সহযোগী করি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এসএসিপি রেনস প্রজেক্ট বিভাগীয় কর্মকর্তা কৃষিবিদ ড.নজরুল ইসলাম বলেন খামারি যুবক/যুবতীদের ইনডিভিজুয়ালি মডেল পেঁপে বাগান করা হয়েছে।এখানে পাঁচ শতাধিক তাই ওয়ান কিং পেঁপে চারাগাছ রোপণ করা হয়েছে। প্রতিটি গাছ থেকে বিশ থেকে তিরিশ কেজি পেঁপে উৎপাদন হবে।
রাকিবুল ইসলাম উদ্বুদ্ধ হয়ে ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদন শুরু করছে।নিজস্ব তৈরি কেঁচো সার জমিতে ব্যবহারের পাশাপাশি বিক্রি করতে পারবেন। আমরা উদ্বুদ্ধ করেছি সমন্বিত খামার গড়ার জন্য। উদ্বুদ্ধ হয়ে পুকুরে মাছ চাষাবাদ শুরু করছেন,ছোট হলেও সে হাঁসের খামার করছে, জমিতে কয়েক হাজার সুপারির চারাগাছ করছে ।আমরা উপজেলা পর্যায়ে প্রাণী সম্পদ দপ্তর ও মৎস্য অধিদপ্তরের সঙ্গে চাষীকে সংযোগ করেছি।এ মডেল দেখে যদি অন্যান্য কৃষকরা এগিয়ে আসে, তাহলে আমরা মনে করি দেশের পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনে অনেকটা সহায়ক হবে।
0 Comments