মোঃ মাইদুল ইসলাম, বিশেষ প্রতিনিধি, ভূরুঙ্গামারী
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় দুই মাদ্রাসাছাত্র গুরুতর আহত হয়েছে। আহতরা হলেন সোনাহাট ইউনিয়নের বানুরকুটি গ্রামের ময়নুল হকের ছেলে মইন বাবু (১৮) ও পাইকেরছড়া ইউনিয়নের আদর্শ মোড় এলাকার আব্দুল গফুরের ছেলে আব্দুল্লাহ আল জোবাইর (১৯)। তারা দুজনেই ভূরুঙ্গামারী সিনিয়র মাদ্রাসার আলিম দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
এ ঘটনায় ৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৭–৮ জনকে আসামি করে ভূরুঙ্গামারী থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা নম্বর ২৩, তারিখ ২৯ জুলাই ২০২৫।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১৭ জুলাই আলিম টেস্ট পরীক্ষা শেষে এক ছাত্রীসহ বাড়ি ফেরার পথে উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের সামনে কিশোর গ্যাংয়ের একটি দল তাদের পথরোধ করে এবং মেয়েসহ চলার কারণ জানতে চায়। এক পর্যায়ে মেয়ের সঙ্গে কথা আছে বলে ছেলেদু’জনকে চলে যেতে বলে। তারা না গেলে ১নং আসামি গালিগালাজ, হুমকি ও কিল-ঘুষি দেয়। প্রাণভয়ে তারা ছাত্রাবাসে ফিরে যায়।
ঘটনার রেশ ধরে ২০ জুলাই বিকেল আনুমানিক ৫টা ৪৫ মিনিটে ICT পরীক্ষা শেষে ভূরুঙ্গামারী ফাজিল মাদ্রাসা থেকে ছাত্রাবাসে ফেরার পথে উপজেলা পরিষদ চত্বর এলাকায় ১নং আসামি ও তার দলবল দুই ছাত্রকে আটক করে। উপজেলা পরিষদ হলরুমের পেছনে নিয়ে গিয়ে তাদের নাকে ও বুকে কিল-ঘুষি, লাথি মেরে এলোপাথাড়ি মারধর করা হয়। পরে মাটিতে ফেলে গলা টিপে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা চালায়। এছাড়া তাদের দাড়ি টেনে তুলে ফেলা হয়।
এ সময় দুজনের পকেটে থাকা মোবাইল ফোন ও টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয় এবং সিমকার্ড খুলে ফেলা হয়। যাওয়ার সময় বলা হয়— এ ঘটনা কাউকে জানালে আবারও মেরে ফেলা হবে।
পরবর্তীতে স্থানীয়ভাবে মীমাংসার চেষ্টা চললেও বিবাদী পক্ষ শালিসে অংশ নেয়নি। ফলে আহত মইন বাবুর বাবা ময়নুল হক বাদী হয়ে মামলা করেন।
এজাহারে যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তারা হলোঃ ১। মোঃ নাঈম হোসেন (২২), নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ কর্মী, পিতা–মোঃ মিজানুর রহমান ২। মোঃ আনাস উদ্দিন (২০), পিতা–মোঃ গোলাম কিবরিয়া (ভুট্ট হাজী) ৩। মোঃ ফাহিম (১৮), পিতা–মোঃ হালিম মহুরী ৪। মোঃ নাহিদ মিয়া (২২), পিতা–মোঃ আমিনুর রহমান ৫। শ্রী বিরাজ (১৮), পিতা–শ্রী কাল্গুন মাস্টার ৬। মোঃ রুমান মিয়া (২০), পিতা–মোঃ রফিকুল ইসলাম ৭। মোঃ তাসফিক (২০), পিতা–মোঃ আজাদুল ইসলাম ৮। শ্রী প্রনব (১৮), পিতা–নিরঞ্জন কর্মকার। সকলেই ভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের দেওয়ানের খামার এলাকার বাসিন্দা।
ভূরুঙ্গামারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আল হেলাল মাহমুদ মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।”
0 Comments