সোনাভরি নদী দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে ভবন। এতে বর্ষা মৌসুমে নদীর স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হবে। সওদাগর নামে একজনের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় গত ১২ জানুয়ারি উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কাছে অভিযোগ দিয়েছেন স্থানীয় এক বাসিন্দা। কিন্তু এখন পর্যন্ত মেলেনি কোনো প্রতিকার। ঘটনাটি রৌমারী উপজেলার বন্দবেড় ইউনিয়নের বাঞ্ছারচর বাজারসংলগ্ন এলাকায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রকাশ্যে নদী দখল করে অবৈধভাবে দ্বিতল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এভাবে নদী দখল করতে থাকলে বর্ষা মৌসুমে নদীর স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হবে। এমনকি, নদী রক্ষা করতে না পারলে এক সময় সোনাভরি নদীর চিহ্ন থাকবে না। গত শুক্রবার সরেজমিন দেখা গেছে, বন্দবেড় ইউনিয়নের বাঞ্ছারচর বাজার এলাকায় সোনাভরি নদীর ওপর ১২০ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। এই সেতু ঘেঁষে সোনাভরি নদী দখল করে পূর্বপাশে গড়ে তোলা হয়েছে দ্বিতল ভবন। স্থানীয় মনছের আলী ও জামাল উদ্দিনসহ অনেকে অভিযোগ করেন, বাঞ্ছারচর বাজার এলাকায় সোনাভরি নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। এই সেতুর দুই পাশে গাইডওয়ালও নির্মাণ করা হয়। সেতুটির গাইডওয়ালের নিচে সোনাভারি নদী দখল করে দ্বিতল ভবন নির্মাণ করেছেন একই ইউনিয়নের তিনতেলী এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি সওদাগর। তাদের অভিযোগ, নির্মাণাধীন সেতুর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ দেওয়া ম্যানেজার মনির হোসেন মোটা অঙ্কের উৎকোচ নিয়ে সওয়দাগর নামে ওই ব্যক্তিকে স্থাপনা নির্মাণের অনুমতি দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। অভিযুক্ত সওদাগরের দাবি, প্রথমে ২০২৩ সালে এক শতাংশ জমি ও ২০১৬ সালে আরও তিন শতাংশ জমি কিনে নিয়েছেন ওই এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুর সালামের কাছ থেকে। তাঁর কাছ থেকে এক লাখ ১০ হাজার টাকায় কিনে নেওয়া হয়। তাই ক্রয়সূত্রে ওই জমির মালিক তিনি।
সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুর সালাম বলেন, ‘আমার রেকর্ডীয় সম্পত্তি। তাই সওদাগর নামে এক ব্যক্তির কাছে জমি বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে।’ অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নদী হলেও খাস খতিয়ানে যায়নি। স্থানীয় বাসিন্দা রমিজ উদ্দিন জানান, তিনিসহ গ্রামবাসী উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার অফিস সূত্রে জানতে পেরেছেন, সওদাগরের ক্রয় করা ওই জমি, যা সেতু থেকে অনেকটা দূরে।
সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার মনির হোসেন বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তা মিথ্যা। এ ছাড়া ওই স্থাপনা নির্মাণের কোনো অনুমতি দেওয়া হয়নি।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাসেল দিও বলেন, দখলের বিষয়ে সরেজমিন পরিদর্শন করা হয়েছে। তাদের অফিসে ডাকা হয়েছে। কাগজপত্র দেখে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
0 Comments