চিলমারী উপজেলার প্রাণকেন্দ্র মাটিকাটা মোড় থেকে হরিপুর-চিলমারী তিস্তা সেতুগামী ৫.২৩০ কিলোমিটার রাস্তার নির্মাণ কাজে নানা অনিয়ম ও ধীরগতির অভিযোগ উঠেছে। রাস্তাটি নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের ফলে এলাকাটি ধুলায় পরিণত হয়েছে, যা স্থানীয় জনজীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। সচেতন মহলের অভিযোগ, ক্ষমতার দাপটে কাজ হাতিয়ে নিয়ে দীর্ঘদিন ফেলে রাখায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলাধীন পাঁচপীর বাজার থেকে চিলমারী উপজেলা সদরের সড়কে তিস্তা নদীর উপর ১,৪৯০ মিটার দৈর্ঘ্যের পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় এই সড়ক উন্নয়ন কাজ শুরু হয়। ২০২৪ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি চিলমারী উপজেলা সদর মাটিকাটা মোড় থেকে পাঁচপীর জিসি সড়ক পর্যন্ত ৫.২৩০ কিলোমিটার এলাকা উন্নয়নের জন্য ১০ কোটি ৩৩ লক্ষ ২ হাজার ৮৩২ টাকা চুক্তি মূল্যে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। তবে, কাজের গুণগত মান ও অগ্রগতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি কাজের সময় অতিমাত্রায় নিম্নদর দাখিল করে এবং নাটোর এলাকার মীর হাবিবুল আলমের লাইসেন্স ব্যবহার করে কাজটি হাতিয়ে নেয়। সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনের এপিএস রাশেদুল ইসলাম রাশেদ এই কাজের দায়িত্বে থাকলেও, কাজের মান ও অগ্রগতি নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। কাজটি ২০২৪ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে ২০২৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও, কাজের অগ্রগতি খুবই ধীরগতির।
রাস্তাটির মাটিকাটা মোড় থেকে কলেজমোড় পর্যন্ত এলাকায় নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে ডব্লিউএমএম (ওয়েট মিক্স ম্যাকাডাম) কাজ করা হয়েছে, যা দীর্ঘদিন ধরে অসম্পূর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। এর ফলে রাস্তাটি ধুলায় পরিণত হয়েছে এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। রাস্তার দুই ধারের দোকান ও বাড়িঘরের মানুষ ধুলায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। রমজান মাসে রোজাদার পথচারীসহ সাধারণ মানুষ এই ধুলার কারণে মারাত্মক কষ্ট ভুগছেন।
স্থানীয় ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম, বাবু মিয়া ও লাল মিয়া জানান, রাস্তার ধুলার কারণে তাদের দোকানের পণ্যসামগ্রী নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তারা দাবি করেন, প্রয়োজনে ঠিকাদার পরিবর্তন করে রাস্তার কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা হোক। তবে, ঠিকাদার রাশেদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে চিলমারী উপজেলা প্রকৌশলী (চঃদাঃ) মো. জুলফিকার আলী জানান, রাস্তার ধুলা কমাতে কয়েকদিন পানি ছিটানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, মাটিকাটা মোড় থেকে কলেজমোড় পর্যন্ত রাস্তাটিতে কার্পেটিং বা প্রাইমকোড দেয়ার বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে আলোচনা হয়েছে।
0 Comments