Ticker

6/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সু‌যোগ পে‌য়েও দু‌শ্চিন্তা কাট‌ছে না মেধাবী অ‌লির

 

ঠিকভা‌বে তিন বেলা খে‌তে পা‌রি‌নি। পড়া‌লেখার খরচ ছিল না। স‌্যাররা ফ্রি প্রাইভেট পড়াইছেন, বসুন্ধরা গ্রু‌পের উপবৃ‌ত্তির মাধ‌্যমে উচ্চ মাধ‌্যমিক পাস করে‌ছি।   আল্লাহর রহম‌তে ক‌া‌ঙ্ক্ষিত স্বপ্ন পূরণ কর‌তে পে‌রে‌ছি। আমার বাবা-মাসহ স‌্যা‌ররা অ‌নেক খু‌শি।


কথাগু‌লো ব‌লে‌ছি‌লেন অদম‌্য মেধাবী আল আমিন অ‌লি হো‌সেন। তি‌নি ঢাকা বিশ্ব‌বিদ‌্যাল‌য়ের বি-ইউনিটে (কলা,আইন ও সামা‌জিক বিজ্ঞান) ভ‌র্তির সু‌যোগ পে‌য়ে‌ছেন। তার প্রাপ্ত নম্বর- ৭৯.২৫


এই শিক্ষার্থীর বা‌ড়ি কু‌ড়িগ্রা‌মের উলিপুর পৌরসভার হায়াৎখাঁন এলাকায়। তি‌নি জহুরুল হক-কল্পনা দম্প‌তির ছে‌লে। বাবা জহুরুল হক (৫২) একজন রিকশাচালক, মা কল্পনা বেগম (৪২)স্থানীয় এক‌টি কারুপ‌ণ্যের শ্রমিক। শত কষ্ট আর দা‌রিদ্রতা‌কে হার মা‌নি‌য়ে সন্তা‌নের এমন সফলতায় উচ্ছ্ব‌সিত এই দম্প‌তি।


২০২৪ সা‌লের এইচএস‌সি পরীক্ষার ফলাফ‌লে উলিপুর সরকা‌রি ক‌লেজ থে‌কে মান‌বিক শাখায় জি‌পিএ-৫ পে‌য়ে‌ছেন আল আমিন হো‌সেন অ‌লি। 


এরআগে ২০২২ সা‌লে উলিপুর মহারাণী স্বর্ণময়ী স্কুল অ‌্যান্ড ক‌লেজ থে‌কে এসএস‌সি পরীক্ষার ফলাফ‌লে জি‌পিএ-৫ পান। প‌রে তা‌কে উচ্চমাধ‌্যমিক পর্যা‌য়ে লেখাপড়ার জন‌্য দে‌শের শীর্ষস্থানীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপ শিক্ষা বৃ‌ত্তি প্রদান ক‌রে।


আল আমিন হো‌সেনের বাবা জহুরুল হক জানান, 'অ‌নেক কষ্ট ক‌রে ছাওয়াটা‌কে পড়াইছি। এর ম‌ধ্যে বি‌ভিন্ন সাহায‌্য সহ‌যো‌গিতাও পে‌য়ে‌ছি। এখন ঢাকা বিশ্ব‌বিদ‌্যাল‌য়ে চান্স পে‌য়ে‌ছে। খুবই খু‌শি হ‌য়ে‌ছি।'

 

তি‌নি আরো ব‌লেন, আমি গরীর মানুষ নুন আন‌তে পান্তা ফুরা‌য়। জ‌মিজমা বল‌তে দুই শতক বসতবা‌ড়ি। ১৫ বছর বাদাম বি‌ক্রি ক‌রে‌ছি। গ্রা‌মে ফে‌রি ক‌রে‌ দুই মে‌য়ে‌কে বি‌য়ে দি‌য়ে‌ছি। দীর্ঘ ২৫ বছর ধ‌রে রিকশা চা‌লাই। এখন বয়স হ‌য়ে‌ছে ঠিকম‌তো চলা‌ফেরা কর‌তে পা‌রি না। ঋণ ক‌রে ব‌্যা‌টা‌রিচা‌লিত এক‌টি রিকশা বা‌নি‌য়ে‌ছি। সে‌টিও পুরাতন হ‌য়ে‌ছে। ওটা দি‌য়েই কোনোরকম আয়‌ রোজগার ক‌রি। তা‌ দি‌য়ে টে‌নেটু‌নে সংসার চ‌লে।


জহুরুল হ‌কের স্ত্রী কল্পনা বেগম ব‌লেন, ছয় মাস বয়সী কো‌লের সন্তান রে‌খে কারুপণ‌্যে যাই। তখন

থে‌কেই কারুপ‌ণ্যে কাজ ক‌রি। বসুন্ধরা গ্রুপ আমার ছে‌লেটাকে শিক্ষা বৃ‌ত্তি দি‌য়ে‌ছিল। এটা দি‌য়ে আইএ (এইচএস‌সি) পর্যন্ত লেখাপড়া কর‌তে পে‌রে‌ছে। এখন ঢাকা বিশ্ববিদ‌্যাল‌য়ে চান্স পে‌য়েছে। ভ‌র্তি হ‌তে না‌কি অ‌নেক টাকা লাগ‌বে। তাছাড়া ঢাকায় পড়‌তে অ‌নেক টাকা খরচ হ‌বে, কিভা‌বে কি হ‌বে কিছু বুঝ‌তে‌ছি না। আল্লাহর রহমত ছাড়া কো‌নো উপায় নেই।


আল আমিন অ‌লি হো‌সেন ব‌লেন, এইচএস‌সি পাস করার পর বসুন্ধরা গ্রুপ থে‌কে শিক্ষাবৃত্তি বন্ধ হ‌য়ে গে‌লে হতাশায় প‌ড়ে যাই। ম‌নে হ‌য়ে‌ছিল আর পড়া‌শোনা কর‌তে পারব না। প‌রে ক‌লে‌জের খায়রুল ইসলাম স‌্যা‌রের সহ‌যো‌গিতায় বিনামূ‌ল্যে ভ‌র্তি কো‌চিং ক‌রলেও ঢাকায় পরীক্ষা দি‌তে যাওয়ার টাকাও ছিল না। আল্লাহর রহমতে বি-ইউনিটে ভ‌র্তির সু‌যোগ পে‌য়ে‌ছি, এখনতো আরো অ‌নেক টাকা লাগ‌বে।

যোগাযোগের ফোন নম্বরঃ 01914386232


প্রতিবেদকঃ মোঃ শাহজাহান খন্দকার, উলিপুর

Post a Comment

0 Comments