নিজস্ব প্রতিবেদক, কুড়িগ্রাম | ২ জুলাই ২০২৫
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ‘জুলাই পদযাত্রা’ ঘিরে কুড়িগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝির ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা থাকলেও, এনসিপির স্বেচ্ছাসেবক ইউনিটের পক্ষ থেকে পুরো বিষয়টিকে ‘নিরাপত্তাজনিত ভুল বোঝাবুঝি’ বলে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সাজ্জাদ হোসেন হামার কুড়িগ্রামকে বলেন,
“রংপুর ও গাইবান্ধার প্রোগ্রামে চলন্ত মিছিলে সাধারণ মানুষ ও উৎসুক কর্মীরা ভিড় করে সেলফি তুলতে যান। এতে কেন্দ্রীয় নারী নেত্রীসহ অনেকেই প্রায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। এই অভিজ্ঞতা থেকে কুড়িগ্রামে পদযাত্রার সময় স্বেচ্ছাসেবকদের কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়—কেউ যেন অনুমতি ছাড়া বলয়ের মধ্যে প্রবেশ করতে না পারে, এমনকি জেলার নেতারাও না।”
তিনি আরও বলেন,
“পদযাত্রা শুরুর ১ মিনিট পরেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১০-১২ জন নেতাকর্মী সামনে এসে বলয় ভেঙে ফুলের তোড়া দিতে চায়। তখন স্বেচ্ছাসেবকরা অনুরোধ করে বলেন, ‘এখন ভেতরে ঢোকা যাবে না।’ কিন্তু তারা কথা না শুনে জোর করে ঢোকার চেষ্টা করেন। মিছিল চলন্ত থাকায় হঠাৎ ধাক্কাধাক্কি লাগে। স্বেচ্ছাসেবকরা প্রতিরোধ করে বলয় শক্ত করেন। এই পরিস্থিতিতেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা অপমানিত বোধ করেন এবং উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়।”
ঘটনার সময় এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক ড. আতিক মুজাহিদ এসে ফুল পরে দেওয়ার অনুরোধ করেন এবং পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন। এ সময় কিছুটা রাগ প্রকাশ করলেও পরে তিনি ব্যক্তিগতভাবে দুঃখ প্রকাশ করেন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখেন,
“নাহিদ আমার ভাই, তার অভিমান ও কষ্ট পাওয়া যৌক্তিক। আমি হয়তো একটু রাগ করেছি, যেটা ঠিক হয়নি। ভাই–ব্রাদারদের মাঝে ভুল–বোঝাবুঝি হতেই পারে, সেটাকে বড় করে না দেখে সংশোধন করাই উচিত।”
তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা পরবর্তীতে পদযাত্রায় অংশ না নিয়ে সরে যান এবং এই ঘটনাকে ‘জুলাই যোদ্ধাদের অবমূল্যায়ন’ বলে আখ্যা দেন।
ঘটনার প্রেক্ষিতে একটি সংবাদ সম্মেলনের ডাক দেওয়া হলেও তা পরে স্থগিত করা হয়।
বিষয়টি নিয়ে এখনো জেলা এনসিপির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি না আসলেও সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য অনুযায়ী, পুরো ঘটনাটি ছিল নিছক একটি নিরাপত্তা-ভিত্তিক ভুল বোঝাবুঝি।
0 Comments